আবহমানকাল থেকে আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ একটি সামাজিক বন্ধন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি। মানুষ সামাজিক জীব হলেও সামাজিক রীতিনীতি নিয়ে আজকাল ক’জনই বা ভাবি! বর্তমানে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে।
সমাজ যদি স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে চলে; সামাজিক মূল্যবোধের বিকাশ যদি না ঘটে, তাহলে আমরা আলোতে নয়; অন্ধকারে হারিয়ে যাব। এক সময় সমাজ ছিল শান্তির বালাখানা। এক সময় সমাজের রীতিনীতি মান্য করে চলতে হতো সবাইকে। সে কথা এখন অতীত হতে চলেছে।
তিলে তিলে আমরা অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি, সব ফুরিয়ে যাওয়ার আগে জাগতে হবে, জাগাতে হবে এবং সব সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
মাদকতা একটি অবৈধ ঘৃণিত কাজ। মাদকই বিধ্বংসী জুয়া এবং অবৈধ যৌনাচারকে উস্কানি দেয়। বলতে গেলে এই নিকৃষ্টতাগুলো হাতে হাত ধরে চলে। এর প্রতি সামাজিক ঘৃণাবোধ তৈরি করা যেখানে সমাজের চালক, সমাজ চিন্তক ও প্রশাসনের কাজ এই জায়গাগুলোর অনেক ক্ষেত্রেই পোকা ধরেছে, বেড়া ধান খেতে শুরু করেছে। ক্ষেত রক্ষা করবে কে? রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব যাদের উপর রয়েছে ডোপ টেস্টে আজকে তারাও ধরা পড়ছে। মাদক, জুয়া, অবৈধ যৌনাচার আসক্তরা তাদের যোগান পেতে যখন দিশেহারা হয়ে যায় তখন মা, বাবা, স্ত্রী, ভাই, ভ্রাতা কাউকেই ক্ষমা করে না। এর উদাহরণ শুধুই কি ঐশী? হাজারো ঐশী আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেক মা-বাবা অবাধ্য ও আসক্ত সন্তানকে আইনের হাতে তুলে দিচ্ছেন। অনেক ঘর, সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। কোলের অবুঝ শিশুটি এসব নোংরামির মাশুল দিচ্ছে জীবন দিয়ে। তাই এরা সমাজের কে কোথায় আছে এটি বিবেচ্য বিষয় নয়। উত্তর একটাই- এরা ঘৃণিত কীট এবং বিপথগামী। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ড মজবুত হলে জাতিও মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। শিক্ষা থেকে যখন নৈতিকতাকে নির্বাসনে পাঠানো হয় তখন তার কুফল জাতির সর্বাঙ্গে দংশন করে। শিক্ষা তখন মানুষ গড়ার উপাদান না হয়ে সমাজদেহে বিষের মত ছড়ায়। সেই বিষেই জাতি অনেক ক্ষেত্রেই জর্জরিত।
সুতরাং মলম বাহিরে লাগালে হবে না। আগে শিক্ষাকেই ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং নৈতিকতার ছাঁচে ঢেলে সাজাতে হবে। আজকে সমাজের এই তিন দুষ্ট চক্রকে পাহারা দিচ্ছে বৈধ-অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তো বটেই অনেক বৈধ অস্ত্রধারীরাও আজকে এই অপকর্মের ককপিটে বসে আছে। আমার আপনার সন্তান, সভ্যতা ও জাতিকে রক্ষার জন্যে একযোগে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
আসুন, আমি, আপনি, আমরা এ কাজটা বুকের হিম্মত নিয়ে করতে শুরু করি। হে মহান আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে শক্তি দাও। আমরা তোমার সাহায্যের কাঙ্গাল।