বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, পল্টনে ২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ সালে বাংলাদেশে দূর্বৃত্তায়নের যাত্রা শুরু হয়েছিল আজ জাতি তার কুফল ভোগ করছে। বর্তমান বেপরোয়া শাসক গোষ্ঠীর নেতাকর্মীদের সরাসরি অংশগ্রহণে লগি বৈঠার তান্ডবে সেদিন ঢাকার রাজপথে প্রাণ দিতে হয়েছিল দেশপ্রেমিক জামায়াত নেতা-কর্মীদেরকে। ২৮ শে অক্টোবরের নারকীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ড সভ্য দুনিয়ায় এক কলঙ্কজনক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ইতিহাসের এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ মূলত বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিল। ২৮শে অক্টোবরের পথ ধরেই বাংলাদেশে ১/১১ এর সরকার এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বরের নিল নকশার পরিকল্পিত নির্বাচন হয়েছিল, যা মুলত একই সূত্রে গাঁথা।
আজ ঢাকার একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ২০০৬ সালে ২৮শে অক্টোবর লগি-বৈঠার পৈশাচিক হামলায় শহীদদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শামসুর রহমান, কামাল হোসাইন, আব্দুস সালাম, ডঃ আব্দুল মান্নান, হাফিজুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৪ বছর আগে ২০০৬সালের ২৮শে অক্টোবরের সেই নারকীয় হত্যাকান্ডের বিচার আমরা দুনিয়ার কারো কাছে চাই না। যেদিন দুনিয়ার কোন লোভ কোন কাজে আসবে না। যেখানে সঠিক বিচারের নিশ্চয়তা রয়েছে। সকল সৃষ্টি যেদিন হাহাকার করে কাঁদবে। সেই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছেই বিচার ভার সোপর্দ করলাম। মানবতার সত্যিকার মুক্তির পথ হলো ইসলাম। ২৮ শে অক্টোবরের লগি বৈঠার তান্ডব দেখিয়ে যারা ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন তারা আজ মুক্তিকামী বিশ্বের মানুষের কাছে চরম ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছেন। অপরদিকে আমাদের শহীদদের রক্ত আজ লাল গোলাপ হয়ে দেশের সর্বত্র বিচরণ করছে। আমরা আশা করছি শহীদদের শাহাদাতের পথ ধরে এদেশে আল্লাহর দ্বীন অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের সকলের আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ জান্নাতের সিঁড়িতে আমাদের সাক্ষাৎ হবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, লগি বৈঠা দিয়ে ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর পৈশাচিক হামলা করে শহীদ করা হয়েছে জামায়াত নেতাকর্মীকে। সেই উত্তপ্ত ময়দানে ২৮শে অক্টোবর বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। শুধু তাই নয় এটা ইসলামী আন্দোলনের জন্যও বিশেষ একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। নেতাকর্মীরা সেই দিন আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে সর্বশেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক শান্ত থেকে সকল পরিবেশ পরিস্থিতির মোকাবেলা করে আমরা ফিরে এসেছিলাম। প্রকৃতপক্ষে সেই দিন এদেশের জাতীয় রাজনীতির কবর রচিত হয়েছে। অন্যদিকে এদেশে ইসলামী দৃষ্টি কোনের ভিত্তিতে আমাদের বিজয় দান করেছেন মহান আল্লাহ। যারা ঐ ঘটনার ক্রিড়ানক ছিলেন এদেশের অধিকাংশ মানুষ আজ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এখানে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা আরও বেগবান হয়েছে। আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ২৮শে অক্টোবরের শহীদেরা হবে আমাদের প্রেরণার উৎস। সেই তামান্না নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।