নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং আসন্ন রমজানে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ও অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ৩ এপ্রিল ২০২১ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,
“রমজান মাস আসার পূর্বেই চাল, ডাল, ছোলা, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, মাছ, গোশতসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতিতে আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
সরকারের অবহেলা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এক শ্রেণীর অতি মুনাফালোভী, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা পবিত্র রমজান মাস আসার পূর্বেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে সীমিত আয়ের লোক এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র লোকদের নাভিশ্বাস উঠেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো পণ্যের মূল্য ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৪০-৬০ টাকা এবং সোনালী মুরগি কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৪০ টাকা, চালের দাম সরকার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না । এ ছাড়া বাজারে শাক-সবজির দামও অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এভাবে হঠাৎ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যেই দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা সরকার ও ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকারের উচিত কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা। যথাযথভাবে বাজার মনিটরিং করতে না পারার কারণেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব সরকারের।
করোনার কারণে এমনিতেই মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গিয়েছে। চাকুরি হারিয়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে মানুষের আয়ের পথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় লাগামহীনভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনসাধারণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ যেন ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’।
আসন্ন রমজান মাসে সীমিত আয়ের দরিদ্র জনগণ যাতে রোজা পালন করতে পারে সে জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে করোনার এই দুঃসময়ে আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে দেশের অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গ এবং বিশেষভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল জনশক্তির প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”