গত ২৬ জুন বরগুনা শহরের কলেজ রোড এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরীফ নাম একজন যুবককে স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাই স্কুলের লম্পট শিক্ষক ও তার প্রশ্রয় দাতা প্রধান শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান আজ ২৮ জুন প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “বরগুনা শহরে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ নামক একজন যুবককে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয় একজন শিক্ষক কর্তৃক ২০জন ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই। এসব ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা উচিত।
সরকারের পূর্ণশক্তি বিরোধী দল দমনে নিয়োজিত হওয়ার কারণে সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয় সন্ত্রাসী দুর্বৃত্তরা চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সামাজিক অবক্ষয়ে আজকে আইয়্যামে জাহেলিয়াতকে লজ্জা দিচ্ছে। তখন যেমন আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাজিল করা পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে মানুষকে জাহিলিয়াত থেকে মুক্তি দিয়ে ছিলেন। আজকের দিনের কঠিন বাস্তবতা হলো কুরআন-সুন্নাহর শাসনের কোন বিকল্প নেই। কুরআন-সুন্নাহর শাসনই কেবল মানবাধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে পারে।
ফেনীর মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত, ঠাকুরগাঁয়ের নার্স তানজিলা আক্তার, কিশোরগঞ্জের নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়া, নারায়গঞ্জের রুপগঞ্জের মহিলা ইউপি সদস্যা বিউটি আক্তার এবং সিরাজগঞ্জের একজন অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য ও তার মাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার পরে বরগুনার রিফাত শরীফের নৃশংস হত্যা এবং নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাই স্কুলের একজন শিক্ষক কর্তৃক ২০জন ছাত্রীকে ধর্ষনের ঘটনা ঘটল। দেশবাসী অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছে যে, দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়া সত্বেও সরকারের টনক নড়ছে না। রিফাত শরীফের হত্যার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন যে, ‘রিফাত হত্যা মানেই আইন-শৃঙ্খলার অবনতি নয়।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিকট দেশবাসীর প্রশ্ন তাহলে আর কত হাত্যাকান্ড ঘটলে তাকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলা যাবে?
দেশবাসী উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্য করছে যে, দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা না থাকার কারণেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড ঘটেই যাচ্ছে। এ সব হত্যাকান্ড বন্ধ করতে হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার কার্যকর না হওয়ার কারণেই একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটেই চলেছে। তদন্ত করে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন হত্যাকান্ড ও নারী ধর্ষনের ঘটনার সাথে সরকারের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরাই জড়িত। বরগুনায় নিহত যুবক ও তাকে হত্যাকারীরা সবাই ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগ ঘরানার লোক। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের মদদদান বন্ধ করতে হবে এবং দলমতের উর্দ্ধে উঠে নিরপেক্ষভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে।
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধন করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে বরগুনার রিফাত শরীফের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাই স্কুলের ২০জন ছাত্রীকে ধর্ষনকারী লম্পট শিক্ষক ও তার প্রশ্রয় দাতা প্রধান শিক্ষককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবী করছি।
আমি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত যুবক রিফাত শরিফের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।”