মিশরের সামরিক শাসক কর্তৃক ইখওয়ানুল মুসলিমিনের সদস্য, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের ফাঁসি কার্যকর করা থেকে বিরত ও তাদের মুক্তি দেয়ার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ২ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেন,
“মিশরের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেণ্ট ড. মুরসিকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করে বর্তমান সামরিক শাসক ২০১৩ সালে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে ইখওয়ানুল মুসলিমীন, দেশের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, চিন্তাবিদ ও মানবাধিকার কর্মীদেরকে মৃত্যুদণ্ডসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার ব্যবস্থা করে। আমরা লক্ষ্য করছি, ২০১৩ সালের বিভিন্ন মামলায় ১৮৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। এই বছর পবিত্র রমজান মাসে অত্যন্ত নির্দয় ও নিষ্ঠুরভাবে তাদের মধ্য থেকে ১৭ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সামরিক শাসক এদের মধ্যে আরো ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে যাচ্ছে মর্মে বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। মিসর সরকারের এ পদক্ষেপে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এ সব ব্যক্তিগণ মিশরে ইসলামী আদর্শ, দ্বীনি চেতনার ভিত্তিতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাদের একমাত্র অপরাধ তারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলকারী শাসকের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছেন। আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে, মিশরের সামরিক শাসক একের পর এক ইসলামী নেতা ও ইসলামী চিন্তাবিদদের ফাঁসি দিয়ে মুসলিম বিশ্বের তরুণ যুব সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে যে আঘাত দিচ্ছেন, তাতে চরমপন্থাকেই প্ররোচিত করা হবে। আমরা বিশ্বাস করি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও কথা বলার সুযোগ কেড়ে নেওয়া হলে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটবে।
আমরা মিশরের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ফাঁসি কার্যকর করা থেকে বিরত থাকার ও অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেয়ার জন্য মিশর সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা এবং গণতন্ত্রকামী সংগঠন ও সংস্থাসমূহকে এই অন্যায় ও প্রহসনের বিচারের নামে দেয়া ফাঁসি কার্যকর করা থেকে বিরত রাখার জন্য আমরা মিশর সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”