রাঙামাটির বরকল উপজেলার থেগা বাজার সীমান্তে সেতু বানাতে চায় ভারত। উদ্দেশ্য চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সড়ক পথে মিজোরাম রাজ্যের যোগাযোগ স্থাপন। ভারতের এ প্রস্তাবে বাংলাদেশের সম্ভাব্য লাভ ও ক্ষতি জানতে চেয়েছে ট্যারিফ কমিশন। এছাড়া দেশটির প্রস্তাবিত ওই রুটের বাংলাদেশ অংশের বর্তমান অবস্থাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এর আগে গত বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি স্পর্শকাতর হিসেবে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল।
একটা দেশের সীমান্তে সেতু নির্মাণের ফলে শুধু বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়বে এই চিন্তা করা বিস্ময়কর ও আশ্চর্যজনক। একটা দেশের সাথে আরেকটা দেশের সীমান্ত থাকে মূলত অনেকগুলো বিষয়কে কেন্দ্র করে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তাসহ আরও বিভিন্ন বিষয় জড়িত এর সাথে। শুধু বাণিজ্যের কথা চিন্তা করে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া আত্নঘাতী ছাড়া আর কিছুই নয়।
থেগা সেতুর নির্মাণ এলাকাটি সীমান্তের কাছে ‘কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ’। সেতু নির্মিত হলে ওই অঞ্চলের নিরাপত্তায় প্রভাব পড়তে পারে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনাচারের ওপর দৃশ্যমান প্রভাব পড়তে পারে। থেগা নদী কর্ণফুলীতে পানির জোগান দেয়, ফলে সেতু নির্মিত হলে কর্ণফুলী নদীর ওপর বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, সীমান্তে সেতু নির্মাণে আপত্তি রয়েছে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। কারণ, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা রয়েছে। রাঙামাটিতে গত কয়েক বছরে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে এসব গোষ্ঠীর হানাহানিতে। সেনাবাহিনীর টহলেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন ‘স্পর্শকাতর’ এলাকায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপিত হলে স্থানীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এছাড়া সেতু নির্মিত হলে বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে মহাসড়ক নির্মাণ করতে হবে। যাতে পরিবেশের ক্ষতি হবে। স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনাচার ও জীবিকার ঐতিহ্যে বিঘ্ন ঘটাবে।
তাই বাংলাদেশের উচিত হবে, নিরাপত্তাসহ সার্বিক স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে সবকিছু ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া।