বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের উদ্যোগে জেলা/মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্যদের নিয়ে ২০ ও ২১ মে দুই দিনব্যাপী শিক্ষাশিবির ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম-এ অনুষ্ঠিত হয়। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম-এর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “শতাব্দীর ঐতিহাসিক প্রয়োজনে জামায়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজ অনেক বর্ষিয়ান দায়িত্বশীল আমাদের মাঝে নেই। গুম, খুন, হত্যা, মামলা, জেল-জুলুম যেনো এ দেশে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের কন্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় কলম বন্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী সরকার জনগণের উপর জুলুমের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজ জন-জীবন অতিষ্ট। বাংলাদেশে ৯০% মুসলমানের বসবাস হওয়া সত্ত্বেও এই সরকার জনগণের হৃদ স্পন্দনের তোয়াক্কা না করে আলেম-উলামা ও দেশের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কথিত গণ-কমিশন উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারি ছত্রছায়ায় ঘৃণ্য তৎপরতায় মেতে উঠেছে।
অতীতে এই আওয়ামী সরকার প্রমাণ করেছে তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নতুন নির্বাচন কমিশনও প্রশ্নবিদ্ধ। গণতন্ত্রহীন উন্নয়নের মুলা ঝুলিয়ে জাতিকে বিভ্রান্তিতে রাখা হয়েছে। আগামীতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। দেশের মানুষের উপর জুলুমের জন্য আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করি। জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের শাহাদাতের পর তাদের দায়িত্বগুলো আমাদের কাঁধে এসেছে। আপনাদেরকে জেলা/মহানগরী পর্যায়ে অর্পিত নিজ নিজ কাজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।”
শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম। বিষয় ভিত্তিক আলোচনা রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি জনাব এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মাওলানা মোঃ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। শিক্ষাশিবিরে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলালসহ অঞ্চল টীম সদস্যবৃন্দ এবং জেলা ও মহানগরী আমীরগণ।
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “ইসলাম একটি আদর্শ ও আন্দোলনের নাম। এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন আম্বিয়া কেরাম ও তাদের উত্তরসুরীগণ। আল্লাহর নবী-রাসূলগণ ছিলেন সত্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও কঠোর পরিশ্রমী। আমাদেরকেও দ্বীনের জন্য পরিশ্রম করতে হবে।
আল্লাহর নিকটই সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ কিছুই দিতে পারবে না। বিপদ-মুসিবত আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। বিপদ-মুসিবতে ধৈর্যের শিক্ষা নবীগণ থেকে ধারণ করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। নবীগণ কেয়ামতের দিন উম্মতের সাক্ষী হবেন। আমাদের আমল-আখলাক নবীর শাফায়াত পাওয়ার উপযুক্ত করতে হবে।”
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “সংগঠন সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য তরবিয়াত ও তাজকিয়ার মাধ্যমে লোক তৈরি করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী সমাজসেবা ও সমাজকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে জনগণের পাশে থাকবে।
নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পন্থায় জামায়াত এগিয়ে যাবে। জনসমর্থন নিয়ে আমরা সামনে যেতে চাই। আমরা সকল মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে চাই। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ প্রতিটি বিভাগ সমৃদ্ধ করে আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।”