বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা সংগঠনের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ বিস্তারিত আলোচনার পর নিম্নোক্ত প্রস্তাবসমূহ গ্রহণ করেঃ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বিধায় জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ক্ষমতায় আসার আগে ১০ টাকা কেজি দরে চাল, বিনামূল্যে সার, কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ও দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার যে প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগ দিয়েছিল, তার ধারে-কাছেও নেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, মাছ, গোশ্তসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য কয়েক গুণ বেড়েছে। গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মূল্য দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে কয়েক গুণ। মানুষের আয় বাড়েনি, বেড়েছে ব্যয়। ফলে জনদুর্ভোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে জনগণের সাথে রসিকতায় লিপ্ত হয়েছে। সরকারের কোনো কোনো মন্ত্রী বলছেন, ‘জনগণের আয় বেড়েছে। অতএব, ব্যয় বাড়তে অসুবিধা কোথায়?’ এসব বক্তব্য জনগণের সাথে উপহাসের শামিল।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অবিলম্বে সকল জিনিসের দাম জনগণের সহনশীল পর্যায়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে সুকৌশলে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে বাদ দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাস, মূল্যবোধ, নৈতিক চেতনাকে অগ্রাহ্য করে দেশের পাঠ্যতালিকা থেকে ইসলামকে বাদ দেয়া হচ্ছে। দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দি যাবৎ এদেশের মানুষ একটি আদর্শ শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য সংগ্রাম করে আসছে। অথচ বর্তমান সরকার দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের উপর আঘাত করে প্লে থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়সমূহ বাদ দিয়ে সেখানে নাচ-গানের বিষয় অন্তর্ভূক্ত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামী শিক্ষা, রীতি-নীতি, কৃষ্টি-কালচার থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করেছে। শিশু বয়সে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করে নতুন প্রজন্মকে ইসলামবিমুখ করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি থেকে ‘ইসলামী শিক্ষা’ পরীক্ষার বিষয়সমূহের বাইরে রাখা হয়েছে। এমনকি নতুন করে ইসলামী শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। সরকারের এ সব পদক্ষেপ দ্রুতই দেশের ছাত্রসমাজকে ইসলামবিমুখ করবে এবং তাদেরকে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করার ও দেশবাসীকে এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাচ্ছে।