বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ৭ জুলাই ২০২২ নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেনঃ-
“হযরত ইব্রাহিম (আ:) এর স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র ঈদুল আযহা আমাদের নিকট সমাগত। ঈদুল আযহা আমাদেরকে ত্যাগ ও কুরবানীর আদর্শে উজ্জীবিত করে। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অল্লাহর উদ্দেশ্যে সবকিছু বিলীন করে দেয়ার চেতনা জাগ্রত করে। সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ, শোষণমুক্ত ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় কুরবানী আমাদেরকে অনুপ্রেরণা দেয়। ত্যাগ ও কুরবানীর মানসিকতা নিয়ে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ন্যায় এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে। আর এর মাধ্যমেই কেবল মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।
আজ আমরা এমন এক সময় পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন করতে যাচ্ছি যখন সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাহাড়ি ঢল, অতিবৃষ্টি এবং ভারতের সুইচগেট খুলে দেয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মানুষের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, গবাদি পশু, মাছের খামার বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, ঘরে খাবার নেই। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ অত্যন্ত অসহায় ও মানবেতর জীবন-যাপন করছে। শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় সিলেট মহানগরীর অধিকাংশ এলাকা ডুবে যায়। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের জীবনযাত্রা এক ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। দেশের এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত ও বেদনাহত হৃদয় নিয়ে আমি আমার প্রিয় দেশবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আসুন আমরা এবারের ঈদুল আযহায় হযরত ইব্রাহিম (আ:) এর ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত কুরবানীর শিক্ষাকে সামনে রেখে আমাদের ত্যাগ ও কুরবানী বহু গুণে বাড়িয়ে দিই। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রদের প্রতি পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতার হাতকে প্রসারিত করি। তাদের সুখে-দুঃখে শরীক হয়ে পবিত্র ঈদের আনন্দে অংশগ্রহণ করি। মহান রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি হাসিলের লক্ষ্যে আমাদের সামর্থ্যরে সবটুকু উজার করে দিই। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় এ সব মানুষের মুখে হাসি ফুটানোই হোক এবারের ঈদে আমাদের অঙ্গীকার।
ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় যারা ইন্তিকাল করেছেন আমরা মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ পাক তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। আমি নিহতদের পরিবার ও আত্মীয়বর্গের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। সকল ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তাআলার নিকট কায়মনোবাক্যে এ দোয়া করছি, তিনি যেন আমাদের সকল প্রকার বিপদ-আপদ দূর করে দেন এবং বন্যায় যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠার তাওফিক দান করেন।
প্রিয় দেশবাসীর ভালবাসায় সিক্ত মজলুম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি দেশবাসী সকলের সুখ-সমৃদ্ধি এবং সার্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি কামনা করছি। সেই সাথে আমি আবারো সবাইকে ব্যথাতুর হৃদয়ে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।”