বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, ইতিহাসের ভয়াবহ বন্যা ছিল মু’মিনদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। বিপদ-মুসিবত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। মু’মিনদের দায়িত্ব হচ্ছে সবর এখতিয়ার করা এবং আল্লাহ তা’য়ালার ওপর ভরসা রাখা। নিজেদের গুনাহখাতার জন্য মহান আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং বিপদ উত্তরণে বিগলিত চিত্তে মহান রবের দরবারেই সাহায্য কামনা করা। আমরা বন্যার সূচনালগ্ন থেকেই বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে পুরো সংগঠন নিয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ অনুযায়ী বিপন্ন জনগণের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে যে সমস্ত ত্রুটি এবং ঘাটতি হয়েছে, মহান প্রভু যেন আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন এবং ভবিষ্যত আরো সুন্দরভাবে মানুষের প্রয়োজনে যেন সাড়া দিতে পারি সেই তাওফিক যেন মহান মা’বুদ আমাদের দান করেন।
তিনি ১০ জুলাই রবিবার সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঈদ উদযাপনে বিভিন্ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে উপরোক্ত কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান সকাল ৮.০০টায় পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন সুনামগঞ্জ শহরের মোহাম্মদপুর জামে মসজিদে। ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান এবং নামাজ আদায় শেষে সর্বস্তরের মুসল্লীবৃন্দের সাথে ঈদের কুশল বিনিময় করেন আমীরে জামায়াত। এরপর আমীরে জামায়াত বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় শহীদ আব্দুস সালাম আজাদের কবর জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারতের পর শহীদের পরিবারের সাথে মিলিত হয়ে ঈদের কুশল বিনিময় ও পরিবারের সদস্যদের সার্বিক খোজ-খবর নেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। পরে একই উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নে ঈদ উত্তর এক প্রীতি সমাবেশে মিলিত হন। পরবর্তীতে আমীরে জামায়াত তাহিরপুর উপজেলার বড়দল গ্রামে সর্বস্তরের মানুষের সাথে এক সমাবেশে মিলিত হন। এরপর আমীরে জামায়াত জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে ও শুকদেবপুর বাজারে পরপর দুটি সমাবেশে মিলিত হন। এ সময় আমীরে জামায়াত বিভিন্ন অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে কুরবানীর গোশত বিতরণ ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
আমীরে জামায়াত মহান আল্লাহ্র দরবারে শুকরিয়া আদায় করে বলেন, “বাংলাদেশে সম্প্রতি বন্যায় সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হচ্ছে সুনামগঞ্জ। এ জেলার ভাইদের সাথে পবিত্র ঈদ উদযাপন করতে পেরে আমি মহান রবের দরবারে বিগলিত চিত্তে শুকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ। এবারকার ঈদে আমার জীবনের সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার এক অনুভূতি আল্লাহ পাক দান করেছেন।
তিনি আরো বলেন, এবারকার বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী এবং খুবই ভয়াবহ। এই ক্ষতি কেবলমাত্র আল্লাহ ‘তায়ালাই পুষিয়ে দিতে পারেন। তবে একটি দ্বীনি সংগঠন হিসেবে এ পুরো সময় জুড়েই সর্বোচ্চ সামর্থটুকু নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বিপন্ন ভাই-বোনদের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ। আপনারা আমাদের জন্য বুক ভরে দো’য়া করবেন। আমরা যেন সব সময় মানবতার ডাকে সাড়া দিতে কোন ত্রুটি না করি। মজলুম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আপনাদের কাছে আরো প্রত্যাশা করে, দ্বীন কায়েমের কাজে আমরা যেন আপনাদের অকুন্ঠ ও আন্তরিক সহযোগিতা পাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাদের কবুল করুন, আপনাদেরকে সকল বিপদ-মুসিবত থেকে পরিত্রাণ এবং আপনাদের সবটুকু ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে দিন। আমীন।
পবিত্র ঈদের এ সফরে আমীরে জামায়াতের সাথে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান, জেলা সেক্রেটারি মমতাজুল হাসান আবেদসহ জেলা/উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক জনাব জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি জনাব শিবলি ওমরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আমীরে জামায়াতের সাথে উপস্থিত থেকে এ সমস্ত নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন এবং তারা প্রত্যেকেই বিপন্ন মানুষের জন্য মহান মুনিবের দরবারে দোয়া করেন।