বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, এবারের বন্যায় মানুষের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কোন মানুষের কিংবা সরকারের নেই, এটা কেবলমাত্র আল্লাহ তা’য়ালাই পুষিয়ে দিতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে সরকারেরও দায়িত্ব আছে আর মানুষ হিসেবে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা চাই সরকার তাদের দায়িত্ব অবশ্যই যথাযথভাবে পালন করুক। আর সরকার যদি এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে এর জবাবদিহি আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের কাছে চাইবেন না। কিন্তু আমরা যে দল করি, যে দল একটা মানবিক সংগঠন, যে দল দেশে একটা পরিবর্তন চায়, যে এখানে সব ধরনের অপরাধ বন্ধ হোক, আর মানুষ তার মর্যাদা নিয়ে বসবাস করুক। আর এটা সম্ভব কেবলমাত্র মহান আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী এবং নবী (সাঃ)-এর দেখানো পথ অনুযায়ী। আর আমরা এ সংগ্রামই করে যাচ্ছি।
তিনি আজ ১১ জুলাই সোমবার সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে খাদ্য ও উপহার সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
আমীরে জামায়াত আজ সকাল ৯.০০টায় সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়নের তেলিখালী বাজারে, এরপর উত্তর রনিখাইল ইউনিয়নের কাকুরাইল মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে এবং পরে পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্য রাজনগর গ্রামে ও পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারে বন্যা কবলিত মানুষের সার্বিক খোজ-খবর ও তাদের মাঝে খাদ্য এবং বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
এ সময় আমীরে জামায়াতের সাথে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট মহানগরীর আমীর জনাব মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা উত্তরের আমীর মাওলানা আনোয়ার হোসাইন খান, সেক্রেটারি ও জৈন্তাপুর উপজেলার সাবেক নির্বাচিত চেয়ারম্যান জনাব জয়নাল আবেদীন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক জনাব জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি জনাব শিবলী ওমরসহ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা/উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
আমীরে জামায়াত বলেন, এবারকার বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী এবং খুবই ভয়াবহ। একটি দ্বীনি সংগঠন হিসেবে সর্বোচ্চ সামর্থটুকু নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বিপন্ন ভাই-বোনদের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ। মানবতার এ মহান কাজে আমাদের কেউ বাধা দিয়ে আটকে রাখতে পারবে না। আমরা কোন অন্যায়ের কাছে মাথানত করবো না, মাথানত করবো একমাত্র মহান আল্লাহর সামনে। আপনারা আমাদের জন্য বুক ভরে দো’য়া করবেন। আমরা যেন সব সময় মানবতার ডাকে সাড়া দিতে কোন ত্রুটি না করি। মজলুম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আপনাদের কাছে আরো প্রত্যাশা করে, দ্বীন কায়েমের কাজে আমরা যেন আপনাদের অকুন্ঠ ও আন্তরিক সহযোগিতা পাই।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, আমরা এমন একটি শাসন চাই, এমন একদল শাসক চাই, রাষ্ট্রের এমন কর্মকর্তা-কর্মচারী চাই, যারা দিনে যথাযথভাবে মানুষের হক আদায় করবে, দায়িত্ব পালন করবে, আর রাতে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, শক্তি-সামর্থ্য চাইবে। এই লড়াইয়ের জন্যই আমাদের নেতৃবৃন্দের ফাঁসি হয়েছে, আমাদের গুম করা হয়েছে, আমাদের খুন করা হয়েছে, আমাদের উপর অবিচার-অন্যায় করা হয়েছে। আর এগুলোর জন্য আমাদের কোনো আফসোস নেই। আফসোস হলো- মহান আল্লাহর দরবারে যে, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যে রাষ্ট্রের শাসকেরা মানবতার কল্যাণে কাজ করবে। আর আমাদের শাসন হবে কুরআন এবং সুন্নাহর শাসন। আমরা দল, ধর্ম নির্বিশেষে সবার কাছে এটিই আশা করি যে, এই লড়াইয়ে আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন ইনশাআল্লাহ।