বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, “মহান আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন, তাকে দিয়েই মানবতার কাজে সহযোগিতা করেন। আমরা বিশ্বাস করি প্রত্যেক মুহূর্তে আল্লাহ তা’য়ালার সাহায্য আমরা পাচ্ছি। এ জন্য মহান রবের দরবারে বিগলিত চিত্তে শুকরিয়া আদায় করি। গত ১৬ জুন থেকে ভয়াবহ যে বন্যার তান্ডব শুরু হয়েছিলো, সপ্তাহখানিক তা ছিল খুবই ভয়াবহ এবং ঐ সময়টা সিলেট জেলার উত্তরাংশ আর সুনামগঞ্জ জেলাটাই ছিল সবচাইতে বেশি বিধ্বস্ত। টোটাল বাংলাদেশের মোট খাদ্যশস্যের ২৬% এই সুনামগঞ্জ জেলা থেকে আল্লাহ তা’য়ালা ব্যবস্থা করে থাকেন। সুতরাং আমরা অনুভব করতে পাচ্ছি এর প্রভাব শুধু সুনামগঞ্জে পড়বে না, সারা দেশেই পড়বে। আমরা বন্যার্ত এলাকার বহু মানুষের চেহারা দেখে বুঝতে পেরেছি, তারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার মতো মানুষ নন। তারা সাহায্য প্রত্যাশা করার মতো মানুষ নন। অথচ সেই মানুষগুলোকে আজ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হয়েছে। গরু, ছাগল, মানুষ সব একসাথে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছেন, যা খুবই বেদনাদায়ক।
তিনি ১৬ জুলাই শনিবার সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে খাদ্য ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
আমীরে জামায়াত ১৬ জুলাই ঈদের ৭ম দিনের মতো দিনভর সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুর ইউনিয়ন, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ও পৈলনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বন্যা কবলিত মানুষের সাথে ঈদের কুশল বিনিময় ও তাদের মাঝে খাদ্য, কাপড় এবং বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
আমীরে জামায়াত উপস্থিত জনতার উদ্দেশে আরো বলেন, “আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না, কিন্তু আমাদের উপকরণের সীমাবদ্ধতা ছিল। এজন্য আমরা সবার কাছে যথাসময়ে পৌঁছাতে পারিনি। আশা করি মহান আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আমাদের যা সাধ্য ছিল, সর্বোচ্চ সামর্থ্য নিয়ে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু সুনামগঞ্জের ৩৩ লক্ষ মানুষকে তো আমরা সহায়তা করতে পারিনি। আমাদের সামর্থ্যরে হাত তো অনেক ছোট। মানুষের মাঝে খাদ্য সরবরাহ করা যত সহজ, পুনর্বাসন করা তত সহজ নয়। আমাদের মাঝে কোনো হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান- সাঁওতাল, রাজনৈতিক দলের কোনো ব্যবধান নেই; এখন সবার আগে মানবতা। এই মানবিক পরিস্থিতিতে যিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তিনি সবার আগে আমাদের সহযোগিতা পাবেন। মানুষকে সম্মান ও ইজ্জত দেয়া প্রত্যেক মুমিনের উপর অবধারিত। এটি তাঁর জন্য ফরজ। তাই আমরা আহবান জানাব- আসুন, মানবতার এই কঠিন ক্রান্তিকালে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই।
এ সময় আমীরে জামায়াতের সাথে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের আমীর জনাব কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও লক্ষ্মীপুর জেলা আমীর মাস্টার রুহুল আমীন ভ‚ইয়া, সিলেট জেলা দক্ষিণের নায়েবে আমীর ও সাবেক দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, নোয়াখালী জেলা সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন ফারুকী, বি-বাড়িয়া জেলা সেক্রেটারি মোবারক হোসাইন, সিলেট জেলা দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইন, জেলা দক্ষিণের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য জনাব আব্দুস সাত্তার, বালাগঞ্জ উপজেলা আমীর ডাঃ মোহাম্মদ আবদুল জলিল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরীর সাবেক সভাপতি মামুন হোসাইন, জিল্লুল হক চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, মাস্টার আব্দুন নূর, সাংবাদিক আমির আলী, শাহ সানাওর আলী, রিদোয়ানুর রহমান, মতিউর রহমান ও ফজলুল হক প্রমুখ।