বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের এক সভা ২৩ জুলাই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অতিসম্প্রতি সরকার ওষুধের দাম বৃদ্ধি করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।
“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, সরকার স্বাস্থ্যসেবায় বহুল ব্যবহৃত ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে আরেক দফা জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে চলছে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার নামে চলছে হয়রানি। বেসরকারি খাতে চিকিৎসা সেবা জনগণের নাগালের বাইরে। স্বাস্থ্যখাতে আমাদের সরকারি বরাদ্দ ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৮৮-তম অর্থাৎ সর্বনিম্ন। দেশের প্রায় ৯ কোটি মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ থেকে কার্যত বঞ্চিত। বাংলাদেশের চিকিৎসাখাত সবচেয়ে অবহেলিত। স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবার নিম্নমানের কারণে সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে এক ভয়াবহ অরাজকতা চলছে। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সমস্যা ও চিকিৎসা উপকরণের সংকটের কারণে মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না বললেই চলে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্যসেবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৫৩টি ঔষধের দাম বৃদ্ধি জনগণকে বিস্মিত করেছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম ৯৯ থেকে ১৩২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ঔষধের এ মূল্য বৃদ্ধি জনগণের উপর বাড়তি চাপ ছাড়া আর কিছু নয়।
এ সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে তাদের কর্মকাণ্ডে ক্রমাগতভাবে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। বর্তমান সরকার যেহেতু জনগণের ভেটে নির্বাচিত নয়, তাই জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। জনগণের কল্যাণের চাইতে সমস্যা বৃদ্ধির কাজেই তারা বেশি ব্যস্ত। দলীয় নেতা-কর্মীদের দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থ পাচার, নানা ধরনের অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির কারণে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। সরকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বাংলাদশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ অবিলম্বে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করার ও ঔষধের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।”