ওলামায়ে কেরাম জাতির জন্য নিয়ামত। এ নিয়ামতের গুরুত্ব উপলব্ধি করা তাদেরই দায়িত্ব। এ দায়িত্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ করা। এ কাজের জন্য আল্লাহ্ পাক নবীগণকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। আর এ কাজে নবীগণের যোগ্য ওয়ারিশ হলেন ওলামায়ে কেরামগণ। আজকে তারা মিম্বার-মিহরাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মিম্বার-মিহরাবের পাশাপাশি দ্বীন কায়েমেও ওলামায়ে কেরামগণকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তাহলেই নিয়ামতের প্রকৃত কদর করা হবে।
৫ আগষ্ট জুমাবার জামায়াতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখা কর্তৃক ভার্চুয়ালি আয়োজিত ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে উপরোক্ত কথা বলেন আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান।
তিনি আরো বলেন, “জ্ঞানের নিয়ামতে ভূষিত হওয়ার পরও যারা কুফুরি, ইলহাদ ও নাস্তিকতার পক্ষে অবস্থান নেন, তারা হতভাগা। নবীজীর সুন্নাহ, আদর্শ, সাহাবায়ে কেরামের (রা) এর বৈশিষ্ট্য এবং ইসলামী আন্দোলন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। জ্ঞানে সমৃদ্ধ আলেমগণ ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত প্রতিরোধে সক্ষম।”
আমীরে জামায়াত আরো বলেন, “ওলামায়ে কেরাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং ময়দানে বক্তব্য, ওয়াজ, নসিহা ও দাওয়াতে ইলাল্লাহর কাজ আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। এতে যুবকরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন, ইসলামের পক্ষে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছেন।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, “ওলামায়ে কেরাম আজ জুলুম-নির্যাতনের শিকার। মামলা-হামলা, হাজত, কারাগার এসব তাঁদের নিত্য সঙ্গী। ইসলাম বিরোধী শক্তি ও সরকার ওলামাদের বিভক্ত করে হক্কানি আলেমদের বিপরীতে বেদায়াতিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তাদেরকে মূল ধারায় আনার অপচেষ্টা করছে। এটি সফল হবে না। ওলামায়ে কেরামের ঐক্য আজ সময়ের অনিবার্য দাবি। হিংসা-বিদ্বেষ, পরস্পর কাঁদা ছোড়াছুড়ি ও ছোটো-খাটো মতবিরোধ নিয়ে মতানৈক্য না করে ইসলামের সৌন্দর্য প্রদর্শনে ঐক্যের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জামায়াত ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত। দ্বীনের কাজে বাধা আসলে আলেমগণকে মূল ভূমিকা রাখতে হয়। আলেমরা এগিয়ে আসলে জনগণ তাদের সহযোদ্ধা হিসেবে মাঠে-ময়দানে মজবুত ভূমিকা রাখে। এভাবেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।”
মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল খালিক বলেন, “ইসলামী জীবন ধারায় ইখতিলাফ থাকা অস্বাভিক নয়। কিন্তু ইফতিরাক অনুমোদিত নয়, হারাম। ওয়াজ-নসিহা ও ইকামাতে দ্বীনের কাজে সচেতনতা ও সতর্কতা সহকারে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করাই মূল উদ্দেশ্য হওয়া জরুরী।”
ডঃ খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, “ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে আলেম সমাজের সোচ্চার ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমানে ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ওলামায়ে কেরামকেই এগিয়ে আসতে হবে। আগামী দিনে সভ্যতা হিসাবে ইসলামের আগমন রুখে দাঁড়ানোর অপচেষ্টা বাংলার জমিনে সফল হবে না।”
জেলা আমীর মাওলানা মুছলেহুদ্দীনের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আব্দুল লতিফ খানের সঞ্চালনায় স্থানীয় ওলামায়ে কেরামের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা নাজমুল ইসলাম, মাসিহুর রহমান, আবদুল আউয়াল আকন্দ, আমিনুল ইসলাম জিহাদী প্রমুখ।