সম্প্রতি ভারতে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠকে কুশিয়ারা ও এর উৎপত্তি বরাক নদীর পানি নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান ২৭ আগস্ট এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বয়ে চলা কুশিয়ারা ও এর উৎপত্তি বরাক নদীর পানি বন্টন নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং আগামী মাসেই এ ব্যাপারে চুক্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি ইতোপূর্বে ভারতের সাথে তিস্তা, ফারাক্কা ও গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ে যেসব চুক্তি করা হয়েছিল, তার অধিকাংশ আজো বাস্তবায়িত হয়নি। তিস্তা চুক্তি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ইতোমধ্যে একতরফাভাবে কোনোরূপ জনমত ছাড়াই ফেনী নদীর পানি ব্যবহারে ভারতকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন কুশিয়ারা ও বরাক নদীর পানি বন্টন নিয়ে ভারতের সাথে কী আলেচনা হচ্ছে তা দেশবাসীর নিকট পরিষ্কার নয়।
তিনি আরো বলেন, সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বয়ে চলা অভিন্ন নদীগুলোর সুষ্ঠু পানি বন্টননীতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে শুকনো মওসুমে ভারত পানি আটকিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করে এবং বর্ষা মওসুমে ভারত পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশকে বন্যায় তলিয়ে দেয়। এতে প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়।
আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে অনুষ্ঠিত বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ নিতে হবে। বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে কোনো ধরনের সমঝোতা বা চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ অবৈধ সরকারকে বাংলাদেশের জনগণ দেয়নি। ইতোপূর্বে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের স্বার্থ অগ্রাহ্য করে ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসমূহ এবং দেশের জনগণ সম্মিলিতভাবে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিল। এখন আবার কুশিয়ারা ও বরাক নদীর পানি নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সেচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”