বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কোন মানুষের পক্ষে এসব ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আর জামায়াত বন্যার শুরু থেকেই অসহায় হত দরিদ্র বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ধাপে ধাপে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে সাধ্যমত কাজ করছে। মানবতার কল্যাণে জামায়াতের এই কর্মতৎপরতা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
আমীরে জামায়াত আরো বলেন, সমাজে জনসংখ্যার একটা বিশাল হচ্ছে হতদরিদ্র এবং শ্রমজীবি। এই জনগোষ্ঠীকে অবহেলিত রেখে জাতীয় উন্নয়ন অগ্রগতি সম্ভব নয়। প্রতি বছর কিংবা কিছুদিন পর পর এইসব মানুষকে একটু একটু সহযোগিতা না করে স্থায়ী রোজগারের একটা ব্যবস্থা করতে পারলে ব্যক্তি সমাজ এবং জাতি উপকৃত হবে। ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়দীপ্ত কাফেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে শ্রমজীবি শ্রমিকদের মাঝে ভ্যানগাড়ী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। একই সাথে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পুঁিজ হারানো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভাইদের নগদ অর্থ সহযোগিতা করছে। এর ফলাফল সুদুরপ্রসারী। কারণ এর মাধ্যমে তারা স্বাবলম্বী হতে পারবে। এভাবেই সমাজে বৈষম্য দুর হবে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে জবাবদিহীতা ও সৎ উপার্জন করতে হবে। তাহলে ইহকালিন সাফল্য ও পরকালিন মুক্তির পথ প্রশ্বস্ত হবে।”
তিনি সোমবার সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে নগরীর মিরাবাজার এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৫ জন শ্রমজীবি শ্রমিকের মাঝে ভ্যানগাড়ী, বন্যায় পুঁজি হারানো ১৭ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীর মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ভ্যানগাড়ী ও নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জামায়াত নেতা জাহেদুর রহমান চৌধুরী, শ্রমিক নেতা এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ আনোয়ার আলী, রফিকুল ইসলাম, মুহিব আলী, জুনায়েদ আল হাবীব, ফয়জুল ইসলাম ও শ্রমিক নেতা মিয়া মোহাম্মদ রাসেল প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শত জুলুম- নিপীড়ন উপেক্ষা করে আর্তমানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের যেকোন ক্রান্তিলগ্নে জামায়াত অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছে। সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহ বন্যায় শুধু সিলেট বিভাগই নয়, দেশের বন্যা কবলিত সকল জেলায় জামায়াত সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। বর্তমানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কাজ করছে। এর মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠী উপকৃত হচ্ছে। এভাবেই জামায়াত সমাজকে বদলাতে চায়। সমাজের সকল স্তরে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জামায়াতের এই পথচলাকে কেউ থামাতে পারবেনা। কারণ জামায়াত মানবতার কল্যাণ সাধনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে কাজ করছে।”
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, “শ্রমিকরা রাষ্ট্রের উন্নয়নের প্রধান কারিগর, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগের কারনে দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর নাম শ্রমিক সমাজ। সাম্প্রতিক বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন শ্রমজীবি মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ। তাই সিলেট মহানগর জামায়াত ধাপে ধাপে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের পুনর্বাসনে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভ্যানগাড়ী ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শ্রমজীবি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ কিছুটা হলেও হালাল রুজি করতে সক্ষম হবেন। এছাড়া আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রতিবছর অস্বচ্ছল শ্রমিকদের মাঝে ভ্যানগাড়ী ও রিকশা বিতরণ করে থাকি। ভবিষ্যতেও এর ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”