ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে আইনটি প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান ২৯ জানুয়ারি প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বাংলাদেশ ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের বিভিন্ন ঘটনায় বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেও একটি প্রতিক্রিয়া হয়। আমরা লক্ষ্য করছি যে, ভারতের লোকসভায় ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়ার পর গোটা ভারতে এর প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের বিপক্ষে বিভিন্ন রাজ্যে আন্দোলন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, বিহার, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীগণ এনআরসি বাস্তবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছেন।
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারত জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে সহিংসতা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২৭ জন মানুষ। আইনটিকে চ্যলেঞ্জ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ইতোমধ্যেই ৬০ টিরও বেশী আবেদন জমা পড়েছে। ভারতের বিশিষ্ট নাগরিকগণ এটিকে দেশের সংবিধানের লংঘন বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলেছেন, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকত্ব নির্ধারণে ধর্মের ব্যবহার মৌলিকভাবেই অসাংবিধানিক।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র ভারতের নাগরিকত্ব আইনকে বৈষম্যমূলক হিসেবে বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, “নতুন আইনটি মৌলিক চরিত্রের দিক দিয়েই বৈষম্যমূলক।” ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ওআইসি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ তাদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছেন।
প্রতিবেশী দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা মনে করি ভারতীয় সংবিধানের আলোকে বিষয়টি সমাধান হওয়া প্রয়োজন- যেখানে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হয়। ইতোমধ্যে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার শান্তিপূর্ণ নিরসনকল্পে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নাগরিকত্ব আইনটি প্রত্যাহার করে নিবেন বলে আমরা আশা করি।”