আগামীকাল ২৮ অক্টোবর। ২০০৬ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টন মোড়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আহুত সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের ওপর পৈশাচিক উন্মাদনায় একদল মানুষ নামের পশু হামলা চালিয়ে ৬ জন নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জীবন্ত মানুষগুলোকে অসংখ্য টিভি-ক্যামেরা আর হাজার-হাজার মানুষের সামনেই স্পষ্ট দিবালোকে দেখতে-দেখতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। লগি-বৈঠার এ তাণ্ডব তৎকালীন বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায় থেকেই চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। আহত নেতা-কর্মীরা যখন রক্তাক্ত দেহে মাটিতে ঢলে পড়লেন, তখনও তাঁদের শরীরের ওপরে অস্ত্রের অব্যাহত আঘাত থামেনি।
বিবেক বিবর্জিত এ মানুষগুলো মৃতদেহের ওপর সেদিন নাচানাচি করেছিলো। মিডিয়ার সুবাদে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ নারকীয় এ তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করে। শিশুরা বিভিন্ন জায়গায় টিভি পর্দায় এ দৃশ্য দেখে চিৎকার দিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়ে। দেশ-বিদেশে ধিক্কারের ঝড় বয়ে যায়। খুনিদের বিরুদ্ধে তখনই মামলার রজু করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে মামলাগুলো শেষ করে দেয়া হয়।
ক্ষমতার অবৈধ প্রভাবে এ জগতে মামলা প্রত্যাহার করে নিলেও মহান আল্লাহর আদালতে খুনি হিসেবে সংশ্লিষ্ট সকলকে সেদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, ইনশাআল্লাহ। সেদিন ২৮ অক্টোবরের শহীদেরা তাঁদের ন্যায্য পাওনা ইনশাআলাহ বুঝে পাবেন।
শুধু পল্টন মোড়েই নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় একই ধরনের পাশবিক তাণ্ডব চালিয়ে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং বিএনপি’র বিপুল সংখ্যক লোককে হত্যা করা হয়। পঙ্গু হয় অসংখ্য লোক। সত্যিকারার্থে সেদিনই বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে। সে বাংলাদেশ এখনো পথে ফিরে আসেনি। ২৮ অক্টোবরে খুনের যে ধারা নতুন করে শুরু হয়েছিলো, আজো তা অব্যাহত আছে।
শহীদদের এ মহৎ ত্যাগ তখনই সার্থকতা পাবে, যখন বাংলাদেশ আবার মানবিক মূল্যবোধে ফিরে আসবে। আমাদেরকে লড়তে হবে সে দিনটির জন্যে। এ দিনে যারা দুনিয়া থেকে জুলুমবাজদের অস্ত্রের আঘাতে বিদায় নিয়েছিলেন, মহান প্রভু তাদের সকলকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। তাঁদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করার তাওফিক এ জাতিকে দান করুন। আমীন।।