অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ৩ আগস্ট এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সরকার ছাত্রসমাজকে দমনের জন্য গণহত্যা চালিয়ে তার দায় বিরোধীদলের ওপর চাপানোর যে অপকৌশল গ্রহণ করেছিল, জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। গণহত্যার অপকর্ম ঢাকার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার বেআইনি ও অসাংবিধানিক পদক্ষেপ সরকারের জন্য কোনো কাজে আসেনি। জনগণ যথার্থই বুঝে গেছে যে, জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য সরকার জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জাতির দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে চেয়েছিল।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সরকারের গণহত্যা, গণগ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে দেশের সর্বস্তরের জনগণ মাঠে নেমে এসেছে। গতকাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, বগুড়াসহ সারাদেশে আন্দোলনরত ছাত্রসমাজের পাশে শিক্ষকসমাজ, সাংবাদিক, কবি-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রী, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ অভিভাবকেরা তাদের সন্তানসহ রাস্তায় নেমে এসেছেন। এই গণজাগরণ দমনের জন্য গতকালও পুলিশ বিভিন্ন স্থানে গুলি, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে সারাদেশে বহু মানুষ আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, আজ ৩ আগস্ট সাধারণ ছাত্রসমাজের কর্মসূচি চলাকালে কুমিল্লা, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করা হয়েছে। দেশের সর্বস্তরের জনগণ ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়িয়ে গণহত্যার বিচার ও শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছেন। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের দাবি একটিই ‘শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।’
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিবেন না। শিশু-কিশোর হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠকে আপনারা স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করবেন না। এ দেশ আপনাদের আমাদের সকলের।
আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক-সাংবাদিকসহ দেশের সকল নাগরিকের একদফা দাবি অবিলম্বে পদত্যাগ করে দেশে শান্তি ও স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন।
তিনি আরও বলেন, আমি ছাত্রসমাজের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের প্রতি আমাদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আবারো পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করছি এবং দেশের সর্বস্তরের জনগণকে ছাত্রসমাজের সঙ্গে গণহত্যাকারী এই সরকারের বিদায়ের দাবিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো অপশক্তি যেন কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রসমাজের এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমীন।”