মহান ভাষা আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক, প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আবদুল গফুরের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ২৭ সেপ্টেম্বর এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক, খ্যাতিমান প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আবদুল গফুর ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর পৌণে ৩টায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৫ বছর বয়সে ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। আমি তাঁর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
তিনি আরও বলেন, ভাষা আন্দোলনের কিংবদন্তি মরহুম অধ্যাপক আবদুল গফুর ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র সৈনিক পত্রিকার সম্পাদক এবং অত্যন্ত সৎ, গুণী ও সাদা মনের মানুষ ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। অগ্রসেনানীদের প্রথম কাতারে অধ্যাপক আবদুল গফুরের নামও স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ। মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্তে¡ও অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার মাত্র দু’মাস আগে পরীক্ষা বর্জন করে ভাষা আন্দোলনে তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ বিলিয়ে দিয়েছিলেন এবং বিশ্বের বুকে বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
তিনি বলেন, বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর একাধারে সুসাহিত্যিক, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও প্রথিতযশা সাংবাদিক ছিলেন। শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সাংবাদিকতা ও জ্ঞান-চর্চায় তিনি অপরিসীম কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও জ্ঞান-গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর জীবনব্যাপী সাধনা ও নিষ্ঠাপূর্ণ অবদান গৌরবময় হয়ে থাকবে। তাঁর মেধা, মনন, মহত্ত¡, শ্রম, নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ, শিক্ষা-আদর্শ, সরল ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ জীবন-যাপন পদ্ধতি নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম, জাতিগঠন ও উচ্চ মানবিক আদর্শে অনুপ্রাণিত করুক, এটাই আমাদের আন্তরিক প্রত্যাশা। তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন অভিভাবককে হারালো। তাঁর শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়।
শোকবাণীতে তিনি আরও বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁকে ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাঁর কবরকে প্রশস্ত করুন। তাঁর গুনাহখাতাগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে নেকিতে পরিণত করুন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজন, সহকর্মী, শুভাধ্যায়ীদেরকে এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।