বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা সৎ, কর্মঠ ও সাহসী তরুণদের হাতে দেশকে তুলে দিতে চাই। তিনি ১৪ নভেম্বর, লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সিতে বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের (NRB’s Voice) এর উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি জনাব আবদুল বারি’র সভাপতিত্বে এবং পরিষদের সেক্রেটারি জনাব সৈয়দ আহবাব হোসেন পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত কোনো প্রবাসী মারা গেলে তার লাশ কীভাবে দেশে আনা যায়, সে ব্যাপারে রাষ্ট্রের চিন্তা করা উচিত। তারা যা রুজি করে তার প্রায় সবই দেশে পাঠিয়ে দেয়। ফলে তাদের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য তারা কোন ডিপোজিট করে রাখতে পারে না। আমরা মুখে মুখে শুধু গালভরা বুলি দিয়ে তাদেরকে ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ বলি। বাস্তবে তাদের জন্য যা করা উচিত আমরা তা করতে পারছি না। পশ্চিমের দেশগুলোতে যারা সিটিজেনশীপ পেয়েছেন তারা মারা গেলে আদের লাশ আর দেশে যাচ্ছে না। কারণ তাদের পরিবার এখানে এবং আল্লাহ তায়ালার হুকুম হচ্ছে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার লাশ খুব দ্রুত দাফন করা উত্তম।
তিনি প্রবাসীদের দেশে ইনভেস্টের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, প্রবাসীরা দুভাবে দেশের কল্যাণ করতে চান। একটা হলো দান-খয়রাতের মাধ্যমে আরেকটা হলো ইনভেস্টের মাধ্যমে। দান-খয়রাত করতে গেলেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আপনি একটা ব্যবসা করবেন তাও কত ঘাটের পানি খেতে হয় তার কোনো শেষ নেই। অথচ আমরা ইনভেষ্ট করার আহবান জানাচ্ছি। ইনভেষ্ট করার একটি পরিবেশ তো থাকতে হবে। সেই পরিবেশ তৈরীতে বর্তমান সরকারের সৎ ইচ্ছা আছে। এ সময়ের মধ্যে তারা হয়তো সবকিছু করতে পারবে না। আমরা আশা করি তারা অন্তত একটা রাস্তা দেখিয়ে যাবেন। তাহলে পরে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা আগামীতে সে পথে চলতে বাধ্য হবেন। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল না। অনেকে ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে ধ্বংস করে আবার অনেকে ক্ষমতায় না গিয়েও সৎ ইচ্ছা থাকার কারণে তারা দেশ ও জাতির জন্য অনেক কিছু করে। আপনারা আমানত হিসেবে আমাদের উপর আস্থা রাখলে, আমাদেরকে ভোট দেয়া উপযুক্ত মনে করলে আমরা দেশ ও জাতির সেবায় সর্বদা নিজেদের নিয়োজিত রাখব।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দিন শেষে বাংলাদেশই আমাদের সব। এখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণে টুকরা টুকরা করলে আমরা অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারবো না। অনেকেই ম্যানপাওয়ারকে অভিশাপ দিচ্ছেন। কারণ, আমরা আমাদের সন্তানদের হাতকে কাজে পরিণত করি না। আমরা স্কীল ডেভলেপমেন্ট করি নাই। আমরা কাগজ বিতরণ করি একটার পর একটা, বছরের পর বছর। সে কাগজগুলো ইনভেলিড, এগুলো কথা বলে না। আমরা তো আমাদের বাচ্চাদের হাতগুলোকে কর্মীর হাত বানাইনি। আমরা যদি স্কীলফুল হাত তৈরী করতে পারি, তাহলে এই বিশাল ম্যানপাওয়ার কখনো অভিশাপ হবে না।
উক্ত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, পরিষদের সহসভাপতি জনাব ফয়েজুর রহমান, সাবেক সভাপতি জনাব আশিকুর রহমান, পরিষদের উপদেষ্টা জনাব সাগীর বাগত ফারুক, জনাব সানা উল্যাহ, কাউন্সিলর জনাব ফারুক চৌধুরীসহ সভাপতি আয়েশা চৌধুরী, ট্রেজারার জনাব আবদুল হালিম চৌধুরী এবং জনাব আবু নাছের মুঃ মুজাহিদ প্রমুখ।
Discussion about this post