বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ১৬ এপ্রিল বুধবার দুপুরে গুলশানের একটি বাসায় বাংলাদেশ সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি এ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এন চুলিক-এর সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় আমীরে জামায়াতের সাথে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব মোবারক হোসাইন এবং আমীরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।
বৈঠক শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিং-এ আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “তাদের সাথে আমাদের খোলামেলা কথা হয়েছে। তারা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন। তারা আগামী ইলেকশন কখন হবে, কীভাবে হবে এটা জানতে চেয়েছেন। তারা আরও জানতে চেয়েছেন সবগুলো দল রিফর্ম চাচ্ছে, সেই রিফর্ম কেমন হতে পারে এবং আমরা কি চাচ্ছি। আমরা যদি আগামীতে দেশের দায়িত্ব পাই তাহলে আমাদের ইকোনমিক পলিসি এবং ফরেন রিলেশনটা কেমন হবে? তারা আমাদের রিজিওনাল বা আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন। আমরা এ সমস্ত বিষয় নিয়ে তাদের সাথে খোলামেলা কথা বলেছি। তারা মাইনরিটি ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন, তারা উমেনসদের রাইটস নিয়ে কথা বলেছেন; তারা লেবার রাইটস নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা তাদের এসব বিষয় নিয়ে কনভারসেশন করেছি। এর পাশাপাশি আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি আমাদের দেশ এখন ক্রিটিক্যাল জাংচার-এ আছে; একটা ক্রুশিয়াল টাইম পাস করছে। এসময় আমেরিকার পক্ষ থেকে ৩৭% ট্যারিফ ধার্য করা হয়েছে। এটা যেন তারা পুনর্বিবেচনা করেন এবং আমাদের এ অনুরোধ যেন তাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের নিকট পৌঁছে দেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা করি এবং আমাদের দেশেও গণতন্ত্র চর্চা করতে চাই। এজন্য আমাদের যা করণীয় তা আমরা করবো। উদাহরণ স্বরূপ আমরা বলেছি, প্রত্যেকটা ক্রেডিবল ইলেকশনে আমরা অংশগ্রহণ করেছি। কম হোক, বেশি হোক সংসদের ভিতরে আমাদের সংসদ সদস্য ছিলেন। এ্যাট দ্যা সেইম টাইম ইলেকশন যখন বাংলাদেশে মৃতপায় হয়ে গিয়েছিলো এরশাদ সাহেবের সময়, তখনকার জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব ইলেকশনকে জীবন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কেয়ারটেকার সরকার ফর্মুলা প্রস্তাবনার মাধ্যমে; যেটা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলো। কিন্তু দুঃখজনভাবে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে দলীয় স্বার্থে এটাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। এখন আবার সারা জাতি এটা চাচ্ছে এবং আমরা আশাকরি এটা আবার সংবিধানে সন্নিবেশিত হবে। আমরা আগামী নির্বাচনটা ফেয়ার ভিত্তিতে করতে চাই। ইতোমধ্যে আমরা তা বারবার বলেছি আপনারা জানেন। কেন চাই তাও আপনারা জেনেছেন।
তিনি বলেন, তারা জানতে চেয়েছেন কখন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। আমরা বলেছি, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন দিবেন। আমরা আশা করি ইলেকশনটা এ সময়ের মধ্যেই হবে। তবে আগামী রমযানের আগে হলে ভালো হয়। জুনের দিকে নির্বাচন দিলে তখন বর্ষা, ঝড়-ঝাপটাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতে পারে। তখন আবার ইলেকশনটা পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিবে। আমরা এইজন্য চাচ্ছি ঐ আশঙ্কার আগেই যাতে ইলেকশনটা হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে আমীরে জামায়াত বলেছেন, জাতি ট্রমাটাইসড! এখনো হাসপাতালে অনেক আহত-পঙ্গুত্ববরণকারীরা পড়ে আছেন। এখনো শহীদদের মা-সন্তান-স্ত্রীরা কান্না করছেন। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের বিচার অবশ্যই হতে হবে। তবে আমরা সঠিক বিচার ও শাস্তি চাই।”
Discussion about this post