বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমেই আমরা দেশে মুক্ত পরিবেশ পেয়েছি। আওয়ামী শাসনামলে দেশকে অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু লজ্জাজনক পতনের পর পলাতক অবস্থায়ও তারা খাসলত বদলাতে পারেনি। ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা পলাতক অবস্থায় ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে। আর এরাই নিকট অতীতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরী উদযাপন করেছিল। মূলত, এদের হাত থেকে কোন শ্রেণি ও পেশার মানুষই রেহাই পায়নি। তারা জামায়াতের শীর্ষনেতাদের ফাঁসীর মুখোমুখি করে অপরাধ স্বীকার পূর্বক প্রাণভিক্ষা চাওয়ার মুখোমুখি করেছিল। কিন্তু তাঁরা হিমালয়ের মত অবিচল থেকে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন।” এতে দেশ ও জাতি সম্মানিত হয়েছে। তিনি আগস্ট শহীদদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
৯ ডিসেম্বর সোমবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল দক্ষিণ থানা আয়োজিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। থানা আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু নাহিদের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন, শূরা সদস্য ডা.মঈন উদ্দিন প্রমূখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী বাকশালীরা দেশে তান্ডব চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে তাদের সকল চক্রান্ত মাটির সাথে মিশে দিয়েছে। যা আমরাও কল্পনা করিনি এবং তা পতিত স্বৈরাচারেরও কল্পনার বাইরে ছিল বরং সবকিছুই হয়েছে আল্লাহ তা’য়ালার পরিকল্পনা মাফিক। মূলত, তারা মানুষের রক্ত নিয়ে খেলেছে। তারা ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। এরপর পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ৫৭ জন দেশপ্রেমী ও চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করার পর জামায়াতের শীর্ষনেতাদের কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে একের পর এক নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি আলেম- উলামা সহ মাদ্রাসা ছাত্ররাও। কিন্তু ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই অপশক্তির লজ্জাজনক পতন হয়েছে।” তিনি আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, “ফ্যাসীবাদ ও স্বৈরাচারমুক্ত দেশ গড়তে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। তাই এই ঐক্য ধরে রাখার জন্য সকলকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় ফ্যাসীবাদী অপশক্তি অবারও মাথাচাঁড়া দিয়ে উঠতে পারে।”
Discussion about this post